আমাদের জীবনের প্রয়োজনে বা বাঁচার প্রয়োজনে যেমন খাবার দরকার, ঠিক তেমনি আমাদের জীবন ও বাচাঁর তাগিদে প্রোগ্রামিং দরকার। আমাদের পুরো মানব দেহটা একটি প্রোগ্রামিং এর মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা বেঁচে থাকার জন্য যেই খাবার খাচ্ছি তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে প্রোগ্রামিং কাজ করছে। খাবার খাওয়ার প্রোগ্রামিংটা কেমন একটু দেখুন।
আমরা খাবার হাত দিয়ে মুখে তোলে নিচ্ছি, এই খান থেকে শুরু–
দাঁত দিয়ে চিবিয়ে খাবারকে গুড়া করছি, জিব্বাহ দিয়ে নাড়া চাড়া করছি এবং স্বাদ নিচ্ছি।
গলা দিয়ে নামিয়ে দিচ্ছি।
খাদ্য নালী দিয়ে সেই খাবার ধিরে ধিরে পাকস্থিলির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।
পাকস্থলিতে খাবার পর্যায়ক্রমে হজম হতে থাকে।
খাদ্যের পুষ্টি উপাদান গুলো শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে যেতে থাকে।
যেই যেই উপাদান গুলো রক্তের সাথে মিশে যাওয়া দরকার সেগুলো রক্তের সাথে মিশে যায়।
যে গুলো প্রশ্রাবের সাথে মিশা দরকার সেগুলো সেখানে মিশে যাচ্ছে।
যে গুলো মলের সাথে মিশে যাওয়া দরকার সে গুলো সেখানে মিশে যাচ্ছে।
যে গুলো প্রশ্রাব ও মলের সাথে মিশে বের হয়ে যাওয়া প্রয়োজন সে গুলো সেখান দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে।
পুরো প্রক্রিয়াটি একটি নির্দিষ্ট প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। হাত দিয়ে খাবার মুখে তোলে দেয়া থেকে মল মূত্র হয়ে বের হয়ে যাওয়া পর্যন্ত পুরু বিষয়টি নির্দিষ্ট কমান্ড বা নির্দেশনা অনুযাই পরিচালিত হচ্ছে, আর আমরাতো এইটা নিশ্চই জানি প্রোগ্রামিং মানে হলো কতিপয় নির্দেশনার ফলাফল।
অনেক কঠিক করে বলেছি তাই না, বুঝতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। এইবার একটু সহজ করে বলি। আপনার ব্যবহৃত কম্পিউটারটি বা স্মার্ট ফোনটি বা টেলিভিশনটি, ওয়াশিং মেশিনটি, মাথার উপর ঘুরছে যেই ফ্যান, সেটি বা এসি টি, কে যদি আরো বেশি স্মার্ট করে তোলতে চান তাহলে আপনার প্রোগ্রামিং দরকার। আপনার রান্নঘরটিকে যদি স্মার্ট রান্নাঘরে পরিনত করতে চান অর্থাৎ আপনি রান্নাঘরে নাই, কোন কাজের মহিলা বা পুরুষও রান্না করেনি তারপরেও আপনার সকল রান্না হয়ে গেছে। তাহলে আপনার প্রোগ্রামিং দরকার।
ভবিষৎতে আপনার সন্তানকে যদি পৃথিবীর সেরা কোন প্রফেশনের সাথে পরিচিত করতে চান তাহলে অবশ্যই তা হবে প্রোগ্রামিং রিলেটেড কোন প্রফেশন। ভবিষৎ পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করবে সকল প্রোগ্রামাররা। মানুষের ৭টি মৌলিক বিষয়ে ঢুকে যাবে প্রোগ্রামিং।
তাই এখন থেকেই সেই প্রস্তুতি নেয়ার দরকার। আপনার সন্তানের বয়স যাই হোকনা কেন, তাকে প্রোগ্রামিং শিখতে দিন, প্রোগ্রামিং শিখতে আগ্রহী করে তোলুন। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে শুধু মাত্র ২০২০ সালের মধ্যে ১০ লক্ষ্য প্রোগ্রামারের সংকটে পড়বে পৃথিবী। জলে, স্থলে, রণে, বনে, আকাশ, মহাকাশে যেখানেই সংকট তৈরি হবে সেখানেই দরকার হবে প্রোগ্রামার এর।
এইবার আসি আসল কথায়– প্রোগ্রামিং টা আসলে শিখা উচিত মজার জন্য, নিজে মজা নেয়া, অন্যকে মজা দেয়া সহ পুরু বিষয়টাতে শুধু মজা আর মজা। শিশুরা খেলতে ভালোবাসে, প্রোগ্রামিংটাও একটা খেলার যায়গা। চাইলেই যে কোন শিশু খেলার জন্য প্রোগ্রামিংটাকে বেছে নিতে পারে। প্রোগ্রামিংকে গিরে আছে মিলিয়ন, বিলিয়ন ডলারের বানিজ্যিক সম্ভাবনা, সেই প্রসংঙ্গে না হয় নাই বা গেলাম। আমাদের যা করতে হবে তা হলো– আমাদের চারপাশে যে দিকে তাকাই, এমন কিছু নাই যেখানে প্রোগ্রামিং নাই, এই বিশ্বাসে বিশ্বাসি হওয়া। তাহলেই আমরা অনুধাবন করতে পারবো প্রোগামিংটা আমাদের জন্য কেন দরকার?